বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫, ১০:২১ অপরাহ্ন

বিয়ের পর দেনমোহরের টাকা নিয়ে পালায়ন করলো যুব মহিলা লীগ নেত্রী

রাজশাহীয় বিভাগীয় প্রতিবেদবক: বিয়ের পর দেনমোহরের টাকা নিয়ে রাজশাহীর এক যুব মহিলা লীগ নেত্রী পালিয়ে গেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। বিয়ের পর একটি তিন তারকা হোটেলে ফুলশয্যার কথা ছিল তার। কিন্তু ফুলশয্যার আগে বাড়িতে টাকা রেখে আসার কথা বলে কেটে পড়েন ওই নারী। এর চারদিন পর তিনি তার স্বামীকে তালাকের নোটিশ পাঠান। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ব্যক্তি গত ২৯ নভেম্বর নগরীর চন্দ্রিমা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। ভুক্তভোগী ব্যক্তির নাম মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি নগরীর পদ্মা আবাসিকের বাসিন্দা। গ্রামের বাড়ি নওগাঁ জেলায়।

মোস্তাফিজুর রহমানের বয়স ৫৮ বছর। তার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কের পর বিয়ের পিঁড়িতে বসেছিলেন তামান্না আক্তার ফেন্সি নামের ৩১ বছর বয়সী ওই নারী। তার বাড়ি নগরীর মেহেরচণ্ডি পূর্বপাড়ায়। তিনি নগরের ২৬ নম্বর ওয়ার্ড যুব মহিলা লীগের নেত্রী। রাজশাহী সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতা বিভাগের মশক শাখার মাঠকর্মী হিসেবে চাকরি করেন তিনি। রাজশাহী মহানগর যুব মহিলা লীগের প্রতিটি কর্মসূচিতেই সামনের সারিতে দেখা যেত তামান্নাকে।

রাজশাহী মহানগর যুব মহিলা লীগের সভাপতি ইসমত আরা জানান, ওয়ার্ড পর্যায়ে তাদের কোন কমিটি নেই। তবে তামান্না আক্তার ফেন্সি ২৬ নম্বর ওয়ার্ড দেখতেন। মহানগরের কর্মসূচিতে অংশ নিতেন। তিনি বিয়ের নামে কারও সঙ্গে প্রতারণা করেছেন কি না তা জানেন না।

ভুক্তভোগী মোস্তাফিজুর রহমান রহমান জানান, তিনি বিবাহিত। তার স্ত্রী অসুস্থ। তাই তিনি দ্বিতীয় বিয়ের কথা ভাবছিলেন। তামান্না আক্তারেরও বিবাহবিচ্ছেদ হয়ে যায় ১৪ বছর আগে। ১৩ বছর বয়সী তার একটি মেয়ে আছে। বছর দুয়েক আগে পরিচয়ের পর তামান্নাকে ভালো লেগেছিল তার। এ জন্য তিনি বিয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। কিন্তু তামান্না তার সঙ্গে প্রতারণা করেছেন।

মোস্তাফিজুর দাবি করেন, একবছর আগেই বিয়ের প্রস্তুতি নিয়েছিলেন তিনি। তখন তামান্নাকে বিয়ের বাজার করতে এক লাখ টাকা দিয়েছিলেন। ওই সময় টাকা নেওয়ার পর বিয়ে করেননি তামান্না। এরপর বছরখানেক দুজনের কোন যোগাযোগ ছিল না। কিছুদিন আগে আবার যোগাযোগ শুরু করেন তিনি। বিয়ে করবেন ভেবে তার মনও নরম হয়ে যায়। তিনি বিয়ে করবেন যদি তাকে ৫ লাখ টাকা দেওয়া হয়। এরপর গত ২০ নভেম্বর রাতে তামান্না তাকে মেহেরচন্ডি এলাকার একটি কাজী অফিসে নিয়ে যান। সেখানে মোস্তাফিজুর নগদ ৩ লাখ ৩ হাজার টাকা দেনমোহরে বিয়ে করেন। বিয়ের পর নগরীর একটি তিন তারকা হোটেলে ফুলশয্যার কথা ছিল তাদের।

মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘বাড়িতে আমার অসুস্থ প্রথম স্ত্রী আছে। তাই ফুলশয্যাটা হোটেলেই করতে চেয়েছিলাম। এ জন্য ১০ হাজার টাকা দিয়ে একটি রুম বুক করি। কিন্তু হোটেলে ওঠার আগে তামান্না বলে যে, সে এতগুলো টাকা নিয়ে হোটেলে উঠবে না। টাকাটা বাড়িতে রেখে আসবে। আমি তাতে সম্মতি দিই। তাকে বাড়ি পাঠিয়ে আমি অপেক্ষা করতে থাকি। কিন্তু সে আর আসেনি। অসংখ্যবার ফোন দিলেও সে আমার ফোন ধরেনি।’

এরপর সম্প্রতি তামান্নার পাঠানো তালাকের নোটিশ হাতে পেয়েছেন মোস্তাফিজুর রহমান। তামান্না এই তালাকে সই করেছেন বিয়ের চার দিন পর, ২৪ নভেম্বর। মোস্তাফিজুর দাবি করেন, এখন তিনি শুনতে পাচ্ছেন যে প্রেমের ফাঁদে ফেলে এভাবে টাকা হাতিয়ে নেওয়া তামান্নার ব্যবসা। তিনি ইতোমধ্যে কয়েকজনের নাম জানতে পেরেছেন, যাদের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিতে শুধু তার বিষয়টিই বিয়ে পর্যন্ত গড়িয়েছে।

তিনি দাবি করেন, বিয়ের দিন দেনমোহরের ৩ লাখ ৩ হাজার টাকা ছাড়াও দুই মাসের খরচ বাবদ আরও ২৪ হাজার টাকা দিয়েছিলেন তামান্নাকে। বিয়ের আগে বাজার করতে দিয়েছিলেন আরও ৬০ হাজার টাকা। এছাড়া কাজী অফিসের খরচ বাবদ দেন আরও ২৫ হাজার টাকা।

যুব মহিলা লীগ নেত্রী তামান্না আক্তার ফেন্সি বলেন, ‘বিয়ের পরই আমাকে দুই কাঠা জমি দেওয়ার কথা ছিল। ওই জমিতে একটি ফ্ল্যাটবাড়ি নির্মাণ করে দেওয়ারও কথা ছিল। আর আমার ভবিষ্যতের জন্য ব্যাংকে ২০ লাখ টাকা দেওয়ার মৌখিক প্রতিশ্রুতি ছিল। এসবের কিছুই দেননি মোস্তাফিজুর। তিনি আমাকে বাড়িও নিয়ে যাবেন না। আমার মেয়ের দায়িত্ব নেবেন না। তাই তার সঙ্গে আমার সংসার করা সম্ভব হয়নি।

Please Share This Post in Your Social Media

উপদেষ্টা মন্ডলীর সভাপতি :বীরমুক্তিযোদ্ধা আইয়ূব আলী
প্রধান সম্পাদক ও প্রকাশক :সাংবাদিক এ.আর.এস.দ্বীন মোহাম্মদ
প্রধান কার্যালয় : বুরোলিয়া তালুকদার পাড়া, মোশারফ প্লাজা ৩য় তলা ,গাজীপুর  সদর, গাজীপুর   ।
মোবাইল: ০১৭৪৬৪৯৪৬১০,০১৯৯৫৯০৮০৬৩,০১৯৮৫১৮৫৮৮৪
কারিগরি সহযোগীতায় : দ্বীনিসফট